Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

জেলা প্রশাসনের পটভুমি

ঐতিহ্যমন্ডিত দিনাজপুরের ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন এবং সমৃদ্ধ। বাংলাদেশেইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর রাজ্যারম্ভের সূচনায় সৃষ্ট আদি জেলা শহরগুলিরঅন্যতম পুরাতন শহর দিনাজপুর। পলাশী যুদ্ধের আট বছর পর ১৭৬৫ খ্রিষ্টাব্দেইংরেজ সেনাবাহিনী কর্তৃক অত্র এলাকা বিজিত হয়। ফলে নবাবী শাসনের অবসানেরসঙ্গে পতন হয় সাবেক রাজধানী ঘোড়াঘাট নগরের। তারপর থেকে গড়ে উঠতে শুরু করেদিনাজপুর শহর।

দিনাজপুর গেজেটিয়ারের মতে ১৭৮৩ খ্রিষ্টাব্দে জেলাশাসনের জন্য দিনাজপুরে স্বতন্ত্র স্থায়ী কালেক্টরেট স্থাপিত হয়। তার পূর্বপর্যন্ত দিনাজপুর-রংপুর যুক্ত কালেক্টরেট ছিল। রাজসেরেস্তা থেকে নথিপত্রপ্রত্যাহার করে জিলা স্কুলের পুরাতন ভবনটিতে (সম্প্রতি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে)আদি কালেক্টর অফিস স্থাপিত হয়। জেলা স্কুল হওয়ার পূর্বে ভবনটি রাজকাচারীছিল। তখন কালেক্টর ছিলেন মি. ম্যারিওয়েট। রাজা ছিলেন রাজবংশের নাবালকউত্তরাধিকারী রাজা রাধানাথ।

১৭৬৫ খ্রিষ্টাব্দে ইংরেজ সেনাপতি মিঃকোট্রিল ঘোড়াঘাটের শেষ মুসলিম ফৌজদার করম আলী খানকে পরাজিত করে এই অঞ্চলেইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠা করেন। এ অঞ্চলে প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে ইংরেজরা১৭৮৬ সালে নতুন জেলা গঠন করে এবং ১৭৯৩ সালে দিনাজপুরে নবসৃষ্ট জেলার দপ্তরস্থাপন করে। দিনাজপুরের কালেক্টর মিঃ এইচ জে হ্যাচ (১৭৮৬-১৭৯৩ পর্যন্তকালেক্টর ছিলেন) এর আমলে এখানের প্রথম নিজস্ব কালেক্টরেট ভবন নির্মিত হয়বর্তমান বাহাদুর বাজারস্থ গোলকুঠি বাড়ীতে। দিনাজপুরে ইংরেজ শাসন ও জেলাকালেক্টরেট নির্মিত হওয়ায় এবং সেই সঙ্গে সুবিন্যস্ত শাসন ব্যবস্থাপ্রবর্তিত হওয়ায় তখন থেকে আধুনিক জেলা শহরটির গড়ন শুরু হয় রাজাদের দেয়াকয়েকটি মৌজার উপর। রাজবাড়ী থেকে সমস্ত নথিপত্র প্রত্যাহার করে গোলকুঠি ভবনেস্থাপন করা হয়। মুগল আমলের ঘোড়াঘাট নগর তখন সম্পূর্ণভাবে পরিত্যক্ত হয়।নবস্থাপিত দিনাজপুর শহর জেলা শাসনের কেন্দ্র ও সবকিছুর কর্মস্থলে পরিণত হতেশুরু করে। ১৮৩৩ থেকে ১৮৭০ সাল পর্যন্ত দিনাজপুরের বিভিন্ন অংশ পূর্ণিয়া, রংপুর ও রাজশাহীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়।

১৮০০ হইতে ১৮০১খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে দিনাজপুরের অনেক বড় বড় এষ্টেট পূর্ণিয়া, রংপুর এবংরাজশাহী জেলার সাথে যুক্ত হয়। ১৮৩৩ খৃষ্টাব্দে এর একটি সুবিস্তৃত অংশ বগুড়াও মালদহ জেলার সাথে যুক্ত করার আগ পর্যন্ত আর কোন রদবদল হয় নাই। ১৮৬৪-১৮৬৫খ্রিষ্টাব্দে দিনাজপুরের খট্রা নামক একটি বিশাল পরগণাকে বগুড়া জেলার সাথেএবং ১৮৬৮-১৮৭০ খ্রিষ্টাব্দে এর আরো একটি বড় অংশ বগুড়া ও মালদহ জেলার সাথেযুক্ত করা হয়। ১৮৯৭-১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে মহাদেবপুর থানা রাজশাহীতেস্থানান্তরিত হয়। দেশ বিভাগের আগ পর্যন্ত আর কোন রদবদল হয়নি।

১৯৪৭সালের ১৪ আগষ্ট ভারতবর্ষে পাকিস্তান ও ভারত নামক দুটি আলাদা রাষ্ট্রজন্মলাভ করে। ঐ সময় রাডক্লিফ রোয়েদাদ অনুসারে এই জেলার দশটি থানা ভারতশাসিত পশ্চিম বাংলা প্রদেশের অন্তর্ভূক্ত হয় এবং পশ্চিম দিনাজপুর জেলার গঠনকরে। অপরদিকে পশ্চিম বাংলার জলপাইগুঁড়ি জেলা হতে তেতুলিয়া, পঞ্চগড়, বোদা, দেবীগঞ্জ ও পাটগ্রাম থানা পাঁচটি দিনাজপুরের সাথে যুক্ত হয়। পাটগ্রাম থানাশাসনকার্যের সুবিধার্থে পরবর্তীতে রংপুর জেলায় স্থানান্তরিত হয়। সমসাময়িকসময়ে জেলার দক্ষিণ অংশের ধামইর, পোরশা ও পত্নিতলা থানা তিনটি তৎকালীনরাজশাহীর নওগাঁ মহকুমার সাথে যুক্ত করা হয়।

সর্বশেষ ১৯৮৪ সালে দিনাজপুরের দুটি মহকুমা ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলায় পরিণত হয়।